সংবাদদাতা:

কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও এ শাহেনা আকতার নামে এক ভূমিদস্যু মহিলার অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। গত ৯ ডিসেম্বর এই মহিলা ও তার ছেলে এনামুল হক প্রকাশ মুন্নার নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দল ঈদগাঁও ৫নং ওয়ার্ড কালিরছড়ার শিয়াপাড়া এলাকায় খুরশিদা বেগম নামে এক অসহায় মহিলার বসত বাড়ি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ইতোমধ্যে দখলের উদ্দেশ্যে বসতবাড়িতে হামলাও চালিয়েছে। শাহেনার নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বাড়ির মালামাল ভাংচুর, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিস পত্র লুট এবং বাড়ির লোকজনকে মারধর করে হামলা চালায়। এঘটনায় চলতিমাসের ৯ তারিখ কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ১১ই ডিসেম্বর মামলার ৬ নাম্বার আসামী নুরুল হাকিম (৩০)কে গ্রেপ্তার করেন ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ দেবাশীষ সরকার। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছে। নুরুল হাকিম একই এলাকার মৃত রমিজ আহমদের ছেলে।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৯ ডিসেম্বর সকালে খুরশিদার বসতবাড়িটি দখলের চেষ্টা চালায় ভূমিদস্যু শাহেনা আকতারের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী চক্র। তারা সকলে ধারালো কিরিচ ও বন্দুক নিয়ে খুরশিদার বাড়িতে হামলা চালায়। শুধু তাই নয় সন্ত্রাসীরা বসতবাড়ির বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ কেটে ক্ষতিসাধিত করে যার আনুমাণিক মূল্য ৩ লক্ষ টাকা। এ সময় মামলার বাদী খুরশিদা বেগম সন্ত্রাসীদের বাঁধা দিতে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকে কিরিচ ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত কাটা জখম ও ফুলা জখম করে। এমন কি ঘরের পাহারাদার আজমুনাহার ও তার মেয়ে সুলতানা মনিকেও সন্ত্রাসীরা মারধর ও ফুল জখম করে।
এ ঘটনায় শাহেনা আক্তার ও তার সহযোগী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একই দিনে মামলা দায়ের করা হয়। এতে আসামী করা হয়েছে- ঈদগাঁও ৫নং ওয়ার্ড কালিরছড়া উত্তরের আইয়ুব আলীর ছেলে এনামুল হক প্রকাশ মুন্না, পালাকাটা এলাকার মনছুর আলমের ছেলে মো. বাবুল, আইয়ুব আলীর স্ত্রী শাহেনা আকতার, কবির আহমদের ছেলে মো. শিপু, মৃত আবদু ছত্তারের ছেলে আলমগীর, মৃত রমিজ আহমদের ছেলে নুরুল হাকিম ও নুরুল আমিন, আবদুল মন্নানের ছেলে শফিকুর রহমান ও আবদুল মন্নানের স্ত্রী সাবেকুন নাহার। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬জনকে সন্ত্রাসীদেরকে আসামী করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দেবাশীষ সরকার বলেন- কালিরছড়ার শিয়াপাড়া এলাকায় বসতবাড়ি ভাংচুর দখলের অপচেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলার ৬নং আসামী নুরুল হাকিমকে গত ১১ই ডিসেম্বর ১৭ইং তারিখে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অপরাপর আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। যে কোনো সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

মামালার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজার সদর থানার ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া বলেন যে কোনো সন্ত্রাসী বা অবৈধ দখলদারদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সবসময় সজাগ রয়েছে। কালিরছড়ার ঘটনায় মামলার সকল আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

মামলার বাদী খুরশিদা বেগম বলেন, জায়গাটি হলো আমার মা’র খরিদা মালিকানাধীন বসতভিটা। আমরা ওখানে বসবাস করি। আমার স্বামীর ব্যবসা ও ছেলের পড়ালেখার সুবাদে আমরা কয়েকমাস ধরে কক্সবাজার শহরে অবস্থান করছি। এই সুবাদে শাহেনা আক্তারের নেতৃত্বে একটি ভূমিদস্যু চক্র বসতভিটা দখলের চেষ্টা চালায়। বর্তমানেও বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে আমাদের। তারা আমার বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাকে ও আমার পাহারাদার সহ পরিবারের কয়েকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করেছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। এখন মামলা দায়ের করায় তারা নিয়মিত ভাবে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।